আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

 আপনি কি আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালন সম্পর্কে জানতে চান? আপনি কি আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকে আমরা এই আর্টিকেলটির মধ্যে আপনাকে জানাবো কিভাবে দেশি গরু পালন করা যায়।


গরু পালন সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। আমরা এই আর্টিকেলটির মধ্যে আধুনিক গরু পালন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনি আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালনের কলাকৌশল সম্পর্কে জানতে পারবেন। আপনি যদি আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালন করতে চান তাহলে আমাদের এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকা

এ আর্টিকাল এর মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আধুনিক পদ্ধতিতে কিভাবে গরু পালন করা যায়। সেইসাথে দেশি গরু পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা অনেকেই জানতে চান কিভাবে কম খরচে একটি খামার তৈরি করব। সেই বিষয়টি এই আর্টিক্যাল এর মধ্যে তুলে ধরেছি। আপনারা যারা গরুর জাত নির্বাচন করতে ভয় পান তাদের জন্য আমার এই আর্টিকেলটি। এখানে সুন্দরভাবে গরুর জাত ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করা আছে। আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আমার এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে সম্পূর্ণ পড়ুন।

দেশি গরু পালন পদ্ধতি

দেশি গরু পালন করে লাভজনক খামার তৈরি করা যায়। বর্তমানে যারা নতুন উদ্যোক্তা হতে চান তারা গরু পালনে খুব উৎসাহী। তাই গরু পালনের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই। দেশী গরু পালনের ব্যবসাটি হতে পারে তাদের একটি লাভজনক ব্যবসা। গ্রামে যাদের কৃষি জমি আছে এবং যারা সবসময় কাঁচা ঘাসের যোগান দিতে পারে তাদের জন্য এই দেশি গরু পালন পদ্ধতি ব্যাপক লাভজনক হবে। 

দেশী গরু পালনের আরেকটি বিশেষ সুবিধা হল দেশী গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে।বাংলাদেশে দেশি গরু পালন সাধারণত কয়েকভাবে করা যেতে পারে। বাংলাদেশী সাধারণত গ্রাম গঞ্জে গোয়াল ঘরে গরু পালন করা হয়। গোয়ালে গরু পালন করার জন্য প্রথমে স্থান নির্বাচন করা উত্তম। এমন স্থান নির্বাচন করতে হবে যেন সেখানে আলো পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে এবং প্রাণীদের আবদ্ধ পরিবেশ মনে না হয়। 

গোয়াল ঘর তৈরি সময় প্রথমেই পশুর সংখ্যা নির্বাচন করা উত্তম যাতে গোয়াল ঘরে পশুদের থাকার কোন অসুবিধা না হয়। আমরা বাড়ির মধ্যে গোয়ালঘর তৈরি করতে পারি অথবা বাড়ির বাইরে আলাদাভাবে তৈরি করতে পারি। গোয়ালঘর নির্মাণের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন গোয়াল ঘরের পশু খাদ্য সরবরাহর পথ, খাওয়ানোর স্থান এবং পশু চলাচলের ব্যবস্থা থাকে। বিভিন্ন ধরনের উপকরণ দিয়ে গোয়াল ঘর নির্মাণ করা যায় যেমন বাঁস, টিন, খড়, ইট ইত্যাদি।

বাংলাদেশের কিছু কিছু অঞ্চলে জমিতে দেশী গরু পালন করা যায়। জমিতে দেশী গরু পালনের সুবিধা হচ্ছে আলাদাভাবে খাবার সরবরাহ করা লাগেনা। জমির কাঁচা ঘাস গ্রহণ করে গরুরখাদ্য চাহিদা মেটানো যায়। কৃষি জমির পাশে গোয়ালঘর নির্মাণ করলে দিনশেষে সেখানে গরু রাখা যায়।

কম খরচে গরু পালন

কম খরচে গরু পালন করা সম্ভব। বর্তমানে গরু পালন করে অনেক মানুষ স্বাবলম্বী হচ্ছে। আমাদের দেশে বর্তমানে গরু পালন একটি লাভজনক পেশা।কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কম খরচে গরু পালন কিভাবে করতে হয়। কম খরচে গরু পালনের প্রথম হচ্ছে গরুর খাদ্য তালিকায় কাঁচা ঘাস রাখতে হবে। কাঁচা ঘাস দিয়ে গরুর খাদ্য চাহিদা পূরণ করা যায়। 

বর্তমানে গরুর দানাদার খাবারের দাম বেশি থাকায় গরুর উৎপাদনের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের গরু পালনের খরচ কমানোর জন্য কাঁচা ও খড় ব্যবহার বাড়াতে হবে। প্রতিদিন নিয়মমাফিক পরিস্কার পানি, কাঁচা ঘাস, খড় ও সরিষা ভাঙ্গানো খৈল দিতে হবে। কম খরচে গরু পালনের আরেকটি উপায় হচ্ছে চারণ ভূমিতে গরুকে নিয়ে যাওয়া।

বাংলাদেশের ফসলের পরে জমি কিছুদিন পতিত পড়ে থাকে। সেই সময়গুলোতে যদি গরুকে চারণভূমিতে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে গরুর খাদ্যের অর্থের পরিমাণ কমে যাবে। এই থেকে খুব কম খরচে আমরা গরু পালন করতে পারব। আমরা গরুর খাদ্য তালিকায় যে সকল খাদ্য রাখি সে সকল খাদ্য গুলো উৎপাদন মৌসুমে সংগ্রহ করে রাখতে হবে। কেননা উৎপাদন মৌসুমে তুলনামূলক খাদ্যের দাম কম থাকে।

আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালন

আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালন করতে হলে নিম্নলিখিত পদক্ষেসমূহ গ্রহণ করতে হবে। নিম্নে উল্লেখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালন করে সফলতা অর্জন করা যাবে।

খামার পরিকল্পনাঃ আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালনের ক্ষেত্রে প্রথম যে জিনিসটা দরকার সেটা হচ্ছে খামার পরিকল্পনা। একটি সুন্দর পরিকল্পনা পারে আগামী দিনের সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে।খামার স্থাপনের জন্য প্রথমে খামার স্থাপন বিষয়ে আগ্রহ আন্তরিকতা থাকতে হবে। প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। 

আধুনিক পদ্ধতিতে খামার স্থাপন করার জন্য জমি নির্ধারণ করতে হবে। জমি নির্বাচনের জন্য ছোট খামার হলে বসতবাড়ি নিকটে অথবা আবাসিক এলাকা থেকে দূরে করলে ভালো হবে। এমন স্থান নির্বাচন করতে হবে যেখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। অন্যান্য খামার থেকে দূরে খামার স্থাপন করা উত্তম। যে জায়গায় খামার স্থাপন করব ওইখানে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকতে হবে। 

আমার ইচ্ছা পূরণ করার পূর্বে মূলধনের বিষয়টি খামার বাস্তবায়ন করতে কত টাকা লাগবে এবং এর উৎস কি কি হতে পারে তা পূর্বেই ঠিক করতে হবে কারণ মূলধন পুরোপুরি সংগ্রহ না করে কাজ শুরু করলে খামার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সম্ভাবনা থাকে। গবাদি পশুর যে সকল খাদ্যদ্রব্য দরকার সে সম্পর্কে যেমন পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে তেমনি খাদ্যদ্রব্য গুলি কোথায়, কতদূর এবং কত দরে সহজলভ্য তা জানতে হবে। 

বছরের সব সময় পাওয়া যাবে কিনা এবং একবারে কিনে রাখার মত পরিমাণ পাওয়া যাবে কিনা তা দেখতে হবে। কর্মসূচির জন্য নিজের পক্ষে যতোটুকু সময় দেওয়া সম্ভব হবে তা আগে বিবেচনায় আনতে হবে। নিজের সময় বেশি দিতে না পারলে বিকল্প হিসেবে কর্মীর ওপর নির্ভর করতে হবে। এক্ষেত্রে কর্মীর গুণাবলী হিসাবে সৎ, নিবেদিত, দায়িত্বশীল, চালাক, সহানুভূতিশীল, পূর্বে এ কাজের বা অনুরোধ কাজের অভিজ্ঞতা আছে এমন কর্মী বাছাই করতে হবে।

উপযুক্ত সময় নির্ধারণঃ উপযুক্ত সময় ডিসেম্বর/জানুয়ারি অথবা জুন/জুলাই মাস। এ সময় আবার একটু ঠান্ডা থাকায় রোগ ব্যাধি চিকিৎসা সহজে করা যায় গবাদি পশু গুলো এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় এসে সহজেই নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। তাছাড়া বিভিন্ন উৎসবে বাজারে যাতে বিক্রি করা যায় তার উপযুক্ত সময় নির্বাচন করতেও এই খামার শুরু করা যেতে পারে।

গরু নির্বাচনঃ আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালন করতে হলে প্রথমে গরু নির্বাচন করতে হবে। গরু নির্বাচনের ক্ষেত্রে গরুটির পূর্ব বংশ ভালো কিনা তা ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। দেহের আকার হতে হবে চতুর্ভূজাকৃতির। পশুর কপাল প্রশান্ত হওয়া অবশ্যক। গায়ের চামড়া ঢিলে ঢালা ও মসৃণ জাতের হলে ভালো হয়। হাড়ের জোড়া গুলি মোটা প্রকৃতির হতে হবে। 

সংকর জাতের গরু তাড়াতাড়ি বেশি মোটা হয়। গরুর পা ও গলা খাটো হতে হবে। বুক চওড়া এবং প্রশস্ত হতে হবে। গরু কেনার সময় সস্তা দামে ক্ষীণ স্বার্থের গুরু কিনলে হৃষ্টপুষ্ট করে লাভ বেশি করা যায়। কোনোভাবে রোগে আক্রান্ত গরু ক্রয় করা যাবে না।

খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালনে খাদ্য ব্যবস্থাপনার দিকে বিশেষ লক্ষ্য দিতে হবে। খাদ্যের মধ্যে খড় কুড়া, ভুষি, কাঁচা ঘাস লতাপাতা, গুল্ম ইত্যাদি গবাদি পশু প্রধান খাদ্য। সঠিক সময়ে গরুর খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। যাতে গরুর দ্রুত তার শারীরিক পরিবর্তন হয়।

সংক্রমণ রোগের টিকা প্রদান ও রোগ প্রতিরোধঃ গবাদি পশুর পালনে সবসময় জন্য খেয়াল রাখতে হবে যেন পশু কোন রোগে আক্রান্ত না হয়। গবাদি পশুর বিভিন্ন ধরনের টিকা থাকে।টিকা প্রদানে গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সঠিক সময়ে সংক্রমণ রোগের টিকা প্রদান করতে হবে।খেয়াল রাখতে হবে কোনভাবেই যেন পশু রোগে আক্রান্ত না হয়।

গরুর বিভিন্ন জাত

গরু পালনের পূর্বে গরুর বিভিন্ন প্রকার জাত সম্পর্কে জানার প্রয়োজন। ভালো জাতের গরু পালন করলে বেশি লাভবান হওয়া যাবে। তাই আমরা এখন গরুর বিভিন্ন জাত সম্পর্কে জানব। যাতে করে আমরা গরুর জাত চীনে ক্রয় করতে পারি।

হলিস্টেইন ফিজিয়ানঃ হলিস্টেইন ফিজিয়ান জাতির গরুর আদি নিবাস হল্যান্ড তবে বর্তমানে সারা পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই পাওয়া যায়। সবচাইতে বেশি দুধ উৎপাদনকারী জাত হিসেবে এই জাতটি পরিচিত। এই জাতের গরুর গায়ের রং পুরো কালো, পুরো সাদা অথবা সাদা এবং কালো মিশ্রণ হয়ে থাকে। এ জাতের গরু সামনের অংশ সরু ও পেছনে তুলনামূলক মোটা ও ভারী হয়ে থাকে।

এ জাতের গরু প্রচুর পরিমাণে দুধ দেয়। একটা গরুর বাচ্চা হওয়ার পরবর্তী বাচ্চা দেওয়ার পর্যন্ত একটানা দুধ দিয়ে থাকে। জন্মের সময় বাচ্চার ওজন ৩০ থেকে ৪০ কেজি হয়। এই জাতের গরুর গাভীর ওজন ৫০০ থেকে ৬০০ কেজির বেশি এবং ষাঁড়ের ওজন ৮০০ থেকে ৯০০ কেজি হয়ে থাকে।

জার্সিঃ বাংলাদেশের প্রচুর পরিমাণে জার্সি গরু পালন করা হয়। ইংল্যান্ডের জার্সি নামক স্থানে এই জাতের গরুর আদি নিবাস। তবে অধিক দুধ উৎপাদনকারী জাত সমূহের মধ্যে বর্তমানে এই জাতের গাভীর দুধে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে। পৃথিবীর প্রায় বেশিরভাগ দেশেই এটি পাওয়া যায়। কম ব্যবস্থাপনা খরচের জন্য এই জাতটি অধিক পরিচিত।

জার্সি গরুর গায়ের রং সাধারণত ফিকে লাল এবং গাঢ় বাদামি হয়ে থাকে। জার্সি গরু অল্প সময়ে বয়স প্রাপ্ত হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে বাচ্চা ও দুধ দেয়। জন্মের সময় জার্সি গরুর বাচ্চা দুর্বল ও ছোট হয় এবং ওজনে তুলনামূলক কম হয়। একটি গাভীর হতে বছরে ৪০০০ থেকে ৪৫০০ লিটার দুধ পাওয়া যায়।

লাল সিদ্ধিঃ লাল সিদ্ধি গরু বাংলাদেশে পালন করা হয়। পাকিস্তানের সিন্দু প্রদেশের করাচি ও হায়দ্রাবাদ অঞ্চলে এ জাতের গরুর আদি বাসস্থান। এ জাতীয় গরুর আকার মাঝারী ধরনের রং টকটকে লাল কোন কোন সময় লাল কালচে হয়। এদের শিং ছোট, গল-কম্বল ও কুঁজ বড় হয়। লালসিদ্ধির বাছুর জন্ম কালে ২১ থেকে ২৪ কেজি ওজন হয়।

শাহীওয়ালঃ বাংলাদেশ ও ভারত উপমহাদেশের সেরা দুধ উৎপাদনকারী গাভী শাহীওয়াল। এই ধরনের গরু সাধারণত লাল রং এর হয়ে থাকে।এদের শরীর খুব মোটা-সোটা, পা খাটো, কপাল চওড়া, সিং খাটো। শাহীওয়াল জাতের গরুর ওলান খুব বড় এবং প্রায় ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। এ জাতের গাভী একটানা ২৮০ দিন দুগ্ধবতী থাকে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমার এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। বর্তমানে গরুর পালন বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় পেশা।তাই আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে গরু পালন সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি এই থেকে আপনারা উপকৃত হবেন। পরবর্তীতে যদি কোন বিষয়ে জানতে চান আমাকে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন। আমি সেটি নিয়ে আর্টিকেল লিখার চেষ্টা করব।

আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি এবং আপনার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের সাথে আমাদের এই ওয়েবসাইট সম্পর্কে শেয়ার করবেন। নিয়মিত ভিজিট করার জন্য উৎসাহ করবেন। আপনার প্রতিটা মুহূর্ত সুন্দর হোক-আসসালামু আলাইকুম

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url