কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর প্রকারভেদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
কম্পিউটার নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ জানার জন্য আপনি হয়তো অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আর্টিকেলটির মধ্যে আপনি জানতে পারবেন লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক ও তার সুবিধা সম্পর্কে।
বর্তমানে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে তথ্য আদান প্রদান করে থাকি। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকারভেদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা
কম্পিউটার নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ এর মধ্যে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক আমরা ব্যবহার করে থাকি। লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করে থাকি। এছাড়াও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্ষেত্রে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক কাজ করে থাকে। লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক সহজে মেনটেনেন্স করা যায় এবং খুব অল্প খরচে স্থাপন করা যায়। সকল কম্পিউটার নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আর্টিকেলটির ধৈর্য সহকারে পড়ুন।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বলতে কি বুঝ
আমরা সবাই নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানি। আমরা অনেকেই জানিনা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সম্পর্কে। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বলতে বোঝায় দুই বা ততোধিক কম্পিউটারের মধ্যে সংযোগ। যে বিশেষ ব্যবস্থায় মডেম, ক্যাবল বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এক কম্পিউটারের সাথে অন্য এক বা একাধিক কম্পিউটার বা টারমিনাল সংযুক্ত হয় তাকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বলে। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডেটা ট্রান্সফার করা হয়।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর প্রকারভেদ
কম্পিউটার নেটওয়ার্কের বিভিন্ন ধরনের প্রকারভেদ রয়েছে যা আমাদের অনেকের অজানা। আমরা প্রতিনিয়ত যে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করি সেই নেটওয়ার্ক গুলোর মধ্যে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর প্রকারভেদ। সাধারণত দূরত্ব ও আকৃতির কথা বিবেচনা করে নেটওয়ার্ককে নিম্নলিখিত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
- লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক/ল্যান (Local Area Network = LAN)
- মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক/ম্যান (Metropoliton Area Network = MAN) এবং
- ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক/ওয়ান (Wide Area Network = WAN)
লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (LAN)
সাধারণত অল্প পরিসরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এর এক কম্পিউটারের সাথে আরেক কম্পিউটারের সংযোগ মাধ্যমে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক গঠিত হয়। লোকাল এর নেটওয়ার্ক সাধারণত ১০ কিলোমিটারের মধ্যস্থ হয়ে থাকে। বর্তমানে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক আমরা সাধারণত বাসা বাড়িতে ব্যবহার করে থাকি।
এছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়। কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা LAN-কে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
- টাইম শেয়ারিং
- রিসোর্স শেয়ারিং
- ক্লায়েন্ট সার্ভার।
LAN এর টপোলজি সাধারণত স্টার, বাস, রিং ইত্যাদি হয়ে থাকে।
লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক এর বৈশিষ্ট্য
- লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক সাধারণত ছোট এলাকার মধ্যে কার্যক্রম পরিচালনা হয়।
- শ্রেণি সংযোগের দ্বারা কম্পিউটারগুলো একে অপরের সাথে সংযুক্ত করা হয়।
- ডেটা পাঠানোর হার সাধারণত ১০ মেগাবিট/সেঃ থেকে ১০০০ মেগাবিট/সেঃ।
- লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতি সহজ ভাবে করা যায়।
- লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক তৈরির ব্যয় অনেক কম।
মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক (MAN)
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর প্রকারভেদের মধ্যে একটি প্রকারভেদ হল মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক। একটি নির্দিষ্ট শহরের বিভিন্ন এলাকার কম্পিউটার গুলোর মধ্যে যে সংযোগ তাকে মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক বলে। মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক ট্রান্সমিশন মাধ্যম হিসেবে টেলিফোন লাইন, মডেম, রাউটার বা ক্ষেত্র বিশেষে মাইক্রোওয়েভ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক সর্বোচ্চ দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার হতে পারে।
উদাহরণঃ কোনো শহরের ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক, দ্রুত গতির তারবিহীন ইন্টারনেট (wi-fi) ইত্যাদি।
ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক কি
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকারভেদের মধ্যে এটিও একটি। ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক হলো দেশ বা মহাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরের বা এলাকার মধ্যে বিভিন্ন কম্পিউটারে নেটওয়ার্কিং কাঠামো স্থাপন করা হলে তাকে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বা (WAN) বলা হয়। বস্তুত ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বা WAN হলো কতকগুলো MAN-এর সমষ্টি। এ ধরনের নেটওয়ার্কে ট্রান্সমিশন মিডিয়া হিসেবে টেলিফোন লাইন (PSTN), মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।
- নেটওয়ার্ক-এর মধ্যস্থিত কম্পিউটারগুলোর মধ্যে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
- বুলেটিন বোর্ড স্থাপন করে টেলিযোগাযোগ করা যেতে পারে।
- ই-কমার্স (ই-মেইল, ইন্টারনেট ব্যবহার করে) করা যেতে পারে।
ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক এর বৈশিষ্ট্য
- ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বৃহৎ এলাকা জুড়ে হয়ে থাকে, এমনকি এর বিস্তৃতি পুরো পৃথিবী জুড়ে হয়।
- লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক এর চেয়ে সাধারণত ধীর গতির হয়ে থাকে।
- ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্কে অবশ্যই ইন্টারনেট ওয়ার্কিং ডিভাইস যেমন- রাউটার, মডেম ইত্যাদি ব্যবহার করতে হয়।
- ওয়্যান সংযোগ সাধারণত কম ব্যান্ডউইডথের হয়ে থাকে। ব্যান্ডউইডথ ৫৬kbps থেকে ১.৫mbps হতে পারে।
ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক এর সুবিধা
- বিভিন্ন পরিসংখ্যানগত উপাত্ত, পত্র-পত্রিকা, বই, চলচ্চিত্র প্রভৃতি সংগ্রহ ও ব্যবহার করা যায়।
- ইলেকট্রনিক মেইল প্রক্রিয়ায় বিশ্বের যেকোন স্থানে চিঠিপত্র প্রেরণ করা যায়।
- ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক নিজের কাজে অথবা অফিস আদালতের বিভিন্ন বুলেটিন বোর্ড গঠন করা যায়।
- ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক দ্বারা অনলাইন শপিং করা যায়।
- ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে সারা বিশ্বকে এক জায়গায় করা।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন কম্পিউটার নেটওয়ার্কের বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্পর্কে। জানতে পেরেছেন কম্পিউটার নেটওয়ার্কের কেমন সুবিধা। কম্পিউটার নেটওয়ার্কে কাজে লাগিয়ে আপনি নেটওয়ার্কিং প্রতিষ্ঠান করতে পারেন। এছাড়াও মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক রয়েছে যা একটি শহরের মধ্যে এ কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।
আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি এবং আপনার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের সাথে আমাদের এই ওয়েবসাইট সম্পর্কে শেয়ার করবেন। নিয়মিত ভিজিট করার জন্য উৎসাহ করবেন। আপনার প্রতিটা মুহূর্ত সুন্দর হোক-আসসালামু আলাইকুম
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url