লাউ এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

লাউ এর উপকারিতা  ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকে আমরা এই আর্টিকেলটির মধ্যে আপনাকে জানাবো লাউ খাওয়ার যে সকল উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে।



ভূমিকা

বাংলাদেশের সবজি তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ সবজি হিসেবে লাউ প্রাধান্য পায়। লাউ বাংলাদেশে ব্যবক হারে চাষাবাদ করা হয়। লাউ উন্নত প্রযুক্তিতে চাষাবাদ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। যা মানুষকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে। লাউ চাষের জন্য উপযুক্ত সময় হিসেবে গ্রীষ্মকাল ও শীতকাল নির্বাচন করা যেতে পারে। লাউ বাণিজ্যিকভাবে ছাড়াও বসতবাড়ির আঙ্গিনায় চাষাবাদ করা যায়।

লাউ খুব অল্প পরিমাণে পুঁজি নিয়ে চাষ করা যায়। লাউ অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি। যা মানুষের দেহের বিভিন্ন রকম ভিটামিন সরবরাহ করে। লাউ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

লাউ চাষের উপযুক্ত সময়

লাউ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল, সঠিক সময়ে লাউ চাষ করলে লাউ চাষে বেশি ফলন পাওয়া যায়। কৃষকদের লাউ চাষ করার জন্য সর্বপ্রথম সঠিক সময় নির্বাচন করতে হবে। লাউ চাষ বাংলাদেশের কয়েকটি মৌসুমে হয়ে থাকে। গ্রীষ্ম মৌসুমে লাউ চাষ করা যায়। গ্রীষ্ম মৌসুমে লাউ চাষ করতে হলে জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে বীজ বপন করতে হবে। 

আবার বাংলাদেশের লাউ চাষ বর্ষা মৌসুমেও হয়ে থাকে। বর্ষা মৌসুমে লাউয়ের ফলন পেতে হলে জুন-জুলাই মাসে বীজ বপন করা উত্তম। পার্বত্য অঞ্চলে লাউ চাষের জন্য মার্চ এপ্রিল মাসে বীজ বপন করতে হবে। তাহলে মূলত ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

গ্রীষ্মকালীন লাউ চাষঃ গ্রীষ্মকালে লাউ চাষের উপযুক্ত সময় হচ্ছে জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে। গ্রীষ্মকালীন লাউ চাষে মাটি নির্বাচন করা খুব জরুরী। বাংলাদেশের সাধারণত বেলে, দোআঁশ ইত্যাদি মাটিতে লাউ চাষ ভালো হয়।লাউ সাধারণত শীতকালীন সবজি হলেও লাউ বাংলাদেশের সারা বছর পাওয়া সম্ভব হয়।

শীতকালীন লাউ চাষঃ লাউ শীতকালীন সবজি হিসেবে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শীতকালীন লাউ চাষের জন্যে ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক মাসে বীজ বপন করা প্রয়োজন। তবে এটি বাংলাদেশের সারা বছর চাষ হয়।শীতকালীন লাউ সাধারণত আমাদের বসতবাড়ির আশপাশে ও বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করা যায়।আমাদের দেশে লাউয়ের বিভিন্ন প্রকার জাত রয়েছে। লাউ এর আকার আকৃতি গাছের প্রকৃতি থেকেও জাতগুলো ভাগ করা যায়। 

লাউ এর মধ্যে একটি জাত হচ্ছে হাইব্রিড লাউ। এটি সাধারণত গোলাকার ও লম্বা আকৃতির হয়। বসতবাড়ির আসে পাশে লাউ প্রায় সব ধরনের মাটিতেই ভালো জন্মে। লাউ লতানো উদ্ভিদ ফলে বাংলাদেশে অধিকাংশ সময় লাউয়ের চারা রোপন করে ভালো ফসল উৎপাদন করা যায়। লাউ কে সাধারণত আঞ্চলিক ভাষায় কদু বলে ডাকা হয়। 

শীতকালে লাউ চাষের জন্য লাউয়ের চারা পলিথিন ব্যাগে তৈরি করা উত্তম। আমাদের দেশে বসতবাড়ির আশেপাশে বাঁসের মাঁচা করে লাউ চাষ করা হয়। এছাড়াও বর্তমানে মৎস্য চাষের পাশাপাশি পুকুরের ধারে লাউ চাষ করে ব্যাপকভাবে লাভবান হওয়া যাচ্ছে। এর ফলে একই জায়গায় মাছ চাষ ও সবজি চাষ করা যায়।

বাণিজ্যিকভাবে লাউ চাষের ক্ষেত্রে প্রথমে জমি নির্বাচন করে ভালোভাবে চাষ দিতে হয়। জমির মাটি মই দিয়ে ভালোভাবে ঝুরঝুরে করে নিতে হয়। লাউ চাষের চারা ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার বড় হলে রোপণের উপযোগী হয়ে ওঠে। লাউ প্রধানত দুই ভাবে চাষ করা যায় মাটিতে চাষ করা যায় ও বাঁসের মাচা করেও চাষ করা যায়। লাউ রোপনের পর খেয়াল রাখতে হবে ফলে যেন পোকার আক্রমণ না হয়।

লাউ এর উপকারিতা

লাউয়ে সাধারণত ৯৬ শতাংশ পানি থাকে। লাউ খাওয়ার ফলে মানুষের শরীর হাইড্রেট থাকে।কোষ্ঠকাঠিন্য পেট ফাঁপা প্রতিরোধ করতে লাউ সব সময় সাহায্য করে। নিয়মিত লাউ খেলে হজমের সমস্যা দূর হয়। মানুষের রাতে ঘুমের সমস্যা দূর করার জন্য লাউ ব্যাপক ভূমিকা রাখে। রক্তের কোলেস্টেরলের পরিমান কমাতে লাউ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। লাউ মরণবাদী ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।

লাউ এর অপকারিতা

লাউ খাওয়ার কিছু অপকারিতা দিক রয়েছে। আমাদের যাদের এলার্জি জনিত সমস্যা আছে তাদের লাউ খেলে এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে। যে সকল ডায়াবেটিস রোগীরা লাউ বেশি পছন্দ করেন সে সকল রোগীদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া লাউ খেতে বিশেষজ্ঞরা নিষেধ করেছেন।

লাউ শাকের পুষ্টিগুণ

লাউশাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা আমাদের শরীরের হাড়কে শক্ত ও মজবুত করে। আমাদের শরীরের যে সকল রোগ ক্যালসিয়াম জনিত কারণে হয়ে থাকে সে সকল রোগের ঝুঁকি কমায় লাউশাক। যাদের ওজন বেশি তারা খাবার তালিকায় নিয়মিত লাউ শাক রাখলে ওজন কমাতে সাহায্য করে। লাউশাক পটাশিয়াম যুক্ত খাবার। লাউ শাকে আইরন থাকে। যা আমাদের রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।

উন্নত জাতের লাউ

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকারের উন্নত জাতের লাউ চাষ করা হয়। উল্লেখযোগ্য লাউয়ের প্রজাতির মধ্যে বারি লাউ-১, বারি লাউ-২, বারি লাউ-৩ ও বারি লাউ-৪। বাংলাদেশে উন্নত জাতের লাউ চাষে ব্যাপক ফলন পাওয়া যায়। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নত জাতের লাউ চাষ করা হয়। রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলায় ব্যাপক পরিমাণে লাউ চাষ করা হয়।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমার এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। কথাই বলে স্বাস্থ্য সুখের মূল। যদি মানুষের স্বাস্থ্য ভালো না থাকে তাহলে তার সবকিছুই খারাপ থাকে। তাই আমরা প্রতিটি খাবারের উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে খাব। নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি সব সময় যত্ন নেব। আশা করি এই আর্টিকেলটি থেকে আপনারা উপকৃত হবেন। পরবর্তীতে যদি কোন বিষয়ে জানতে চান তাহলে আমাকে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।

আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি এবং আপনার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের সাথে আমাদের এই ওয়েবসাইট সম্পর্কে শেয়ার করবেন। নিয়মিত ভিজিট করার জন্য উৎসাহ করবেন। আপনার প্রতিটা মুহূর্ত সুন্দর হোক-আসসালামু আলাইকুম

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url