পাঙ্গাস মাছ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
পাঙ্গাস মাছ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে আপনি যদি জেনে না থাকেন তাহলে আজকে এই আর্টিকেলটির মধ্যে আপনাকে জানাতে চলেছি। আপনি যদি ভেবে থাকেন পাঙ্গাস মাছ চাষ করবেন তাহলে আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। এছাড়াও আর্টিকেলটিতে আপনি নদীর পাঙ্গাস মাছ চেনার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
অন্যান্য মাছের তুলনায় পাঙ্গাস মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে লাভবান হওয়া যায়। তাই বাংলাদেশে পাঙ্গাস মাছের চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাঙ্গাস মাছ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা
আমাদের দেশে পুকুরে পাঙ্গাস মাছ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। পাঙ্গাস মাছ খেতে অনেক সুস্বাদু। তাই কমবেশি সবারই পাঙ্গাস মাছ খুবই পছন্দ। পাঙ্গাস মাছ চাষে খাবারের পরিমাণ অনেক কম লাগে তাই খুব কম খরচে পাঙ্গাস মাছ চাষ করা যায়। পাঙ্গাস মাছ পুকুরে অনেক জলের উদ্ভিদ খেয়ে থাকে যার ফলে বাড়তি খাবার খুব অল্প পরিমাণে সরবরাহ করা হয়। পাঙ্গাস মাছ দ্রুত বৃদ্ধি হওয়ায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাজারজাত করা যায়।
পরিবহনের দিক দিয়ে পাঙ্গাস মাছ ঝামেলা বিহীন কারণ পাঙ্গাস মাছ অল্প পানিতে অনেকক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে ফলে পাঙ্গাস মাছকে জীবিত অবস্থায় বাজারজাত করা যায়। জীবিত অবস্থায় বাজারজাত করলে মাছের ভালো দাম পাওয়া যায়। পুকুরে পাঙ্গাস মাছের সাথে বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষ করা যায় অর্থাৎ মিশ্র মাছ চাষ পদ্ধতি অবলম্বন করেও পাঙ্গাস মাছ চাষ করা যায়। প্রিয় পাঠক আপনি যদি পাঙ্গাস মাছ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন।
পাঙ্গাস মাছ চাষের সুবিধা
পাঙ্গাস মাছের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমে আপনাকে জানতে হবে কারণ মাসের চাষের বিভিন্ন রকম সুবিধা সম্পর্কে। আপনি যদি একজন মাছ চাষী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই মাছ চাষের বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে জানা দরকার। পাঙ্গাস মাছ এদেশের মানুষের অতি প্রিয় একটি মাছ। এর বাজার চাহিদা এবং মূল্য অনেক বেশী।
অতি সম্প্রতি দেশী ও বিদেশী পাঙ্গাসের একক ও মিশ্র চাষ এবং বিদেশি পাঙ্গাস এর কৃত্রিম প্রজননের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ইতিমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি হ্যাচারীতে পাঙ্গাসের রেণু উৎপাদন শুরু হয়েছে এবং চাষ উপযোগী পোনা পাওয়া যাচ্ছে।
পাঙ্গাস মাছ মানুষের কাছে সুপরিচিত এবং খুব পছন্দনীয়।
- রুই জাতীয় মাছের সাথে কাজ করা যায় কারণ এই মাছ রাক্ষসের স্বভাবের নয়।
- বিভিন্ন ধরনের আকৃতির জলাশয় পাঙ্গাস মাছ চাষ করা যায়।
- পাঙ্গাস মাছ অতি দ্রুত বাড়তে পারে।
- পাঙ্গাস মাছ সব ধরনের খাবার খেয়ে বেঁচে থাকে। তাই খাবারের খরচটা তুলনামূলক কম হয়।
- এই মাছ অধিক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।
- বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
- রোগ প্রতিরোধের দিক দিয়ে পাঙ্গাস মাছ এগিয়ে আছে কারণ পাঙ্গাস মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি।
- পাঙ্গাস মাছ চাষে ক্ষতি হওয়ার যোগী কম থাকে এবং খুব সহজে মাছ ধরা যায়।
- এই মাছের স্থায়িত্বকাল অনেক বেশি তাই জীবিত মাছ পরিবহন করা অত্যন্ত সহজ এছাড়াও জীবিত মাছ বাজারজাত করা সম্ভব।
পাঙ্গাস মাছ চাষ পদ্ধতি
পাঙ্গাস মাছের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে হয়তো আপনারা জানেন না। আপনি ভাবতেছেন কিভাবে পাঙ্গাস মাছ চাষ করবেন। আপনি যদি একজন মাছ চাষী হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই পাঙ্গাস মাছের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। বর্তমানে পাঙ্গাস মাছের চাষ ব্যাপক চাহিদা পেয়েছে। পাঙ্গাস মাছ চাষ করতে হলে বিভিন্ন দিকে নজর দিতে হবে।
পুকুর প্রস্তুতঃ পাঙ্গাস মাছ চাষের জন্য একটি পুকুরের তিনটি ধাপে সম্পন্ন করতে হবে। যেমন- মজুদ পূর্ব ব্যবস্থাপনা, মজুদ কালীন ব্যবস্থাপনা ও মজুদ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা।
মজুদ পূর্ব ব্যবস্থাপনাঃ পাঙ্গাস মাছ চাষের জন্য মজুদ পূর্ব ব্যবস্থাপনায় কিছু জরুরী কাজ করতে হয় সেগুলো হল।
- পুকুরে যদি আগাছা থেকে থাকে তবে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
- পুকুরের পাড় ভালোভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রাখতে হবে।
- যে পুকুরে পাঙ্গাস মাছ চাষ করবেন ওই পুকুরে পূর্বে কোন রাক্ষসী মাছ আছে কিনা পরীক্ষা করে সেগুলা দূরীকরণ করতে হবে।
- পুকুরের পাড় ও তলা ভালোভাবে মেরামত করতে হবে।
- পুকুরে চুন প্রয়োগ ও প্রস্তুতকালীন সার প্রয়োগ করতে হবে।
- পাঙ্গাস মাছ চাষের নির্বাচিত পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য কি পরিমান উৎপাদন হয় তা পর্যবেক্ষণ করা।
- পুকুরের পানিতে কোন প্রকার বিষাক্ততা আছে কিনা তা পরীক্ষা করা।
মজুদকালীন ব্যবস্থাপনাঃ পাঙ্গাস মাছ চাষের জন্য পুকুরের মজুদকালিন ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।
- এই মাধ্যমে আপনাকে পোনার জাত অর্থাৎ আপনি কোন প্রজাতির পোনা চাষ করবেন এবং পুকুরে এর ঘনত্ব কত হবে তা নির্ধারণ করতে হবে।
- পোনা পরিবহন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পোনা পরিবহনের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- পোনা মাছ কোমল শিশুর মত হয়ে থাকে। তাই পোনা মজুদের সময় অনুকূল আবহাওয়া তৈরি করতে হবে।
মজুদ পরবর্তী ব্যবস্থাপনাঃ পাঙ্গাস মাছ পুকুরে ছাড়ার পরে কিছু ব্যবস্থাপনা থাকে সেগুলো হলোঃ
- নিয়মিত পোনার বাঁচার হার পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এটি করলে বোঝা যাবে আপনার পুকুরে কি পরিমাণ পোনা আছে।
- সঠিক মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে।
- সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে।
- মাছ নির্দিষ্ট ওজনের হলে আহরণ ও বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
পুকুরের জলজ আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। রাক্ষুসে/অবাঞ্চিত মাছ জাল টেনে অথবা পুকুর শুকিয়ে ধরে ফেলতে হবে। তারপর প্রতি শতাংশে ১-২ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে। চুন প্রয়োগের ৭ দিন পর পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরির জন্য জৈব সার যেমন গোবর প্রতি শতাংশে ১০ কেজি এবং ৩৬০ গ্রাম অজৈব সার (২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১৬০ গ্রাম টি, এস, পি) প্রয়োগ করতে হবে। সার প্রয়োগের ৭-১০ দিন পর পোনা মজুদ করা যায়। ৬-৮ ফুট গভীরতা সম্পন্ন পুকুর পাঙ্গাস মাছ চাষের জন্যেউপযোগী। ৫০ শতক থেকে দেড় একর আয়তনের পুকুরই পাঙ্গাস মাছ চাষের জন্য উত্তম।
পাঙ্গাস মাছ চষের পোনা মজুদ
পুকুরে একক অথবা অন্য প্রজাতির মাছের সাথে একত্রে পাংগাস মাছ চাষ করা যেতে পারে। একক চাষের ক্ষেত্রে প্রতি শতাংশে ৫৮ সেঃ মিঃ আকারের ৫০-৬০টি পোনা মজুদ করা যেতে পারে। মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে প্রতি শতাংশে সিলভার কার্প ৮-১০টি, কাতলা ৫-৬টি, রুই ১০-১২টি এবং পাঙ্গাসের ২০-২২টি পোনা থাকলে ভাল হয়। মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে মৃগেল, কাল বাউস, কার্পিট মাছ ছাড়া যাবে না।
পাঙ্গাস মাছে খাদ্য প্রয়োগ
পোনা মজুদের পর পরই প্রতিদিন মাছের দেহ ওজনের ৩% হারে পম্পূরক খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। সম্পূরক খাদ্য তৈরির উপাদান ও অনুপাত নিম্নে দেয়া হলোঃ
- খৈল-২০%
- কুড়া-৪০%
- আটা-২০%
- ফিসমিল-২০%
পাঙ্গাস চাষের ক্ষেত্রে খাবারে প্রাণীজ আমিষ থাকা বাঞ্ছনীয়। ফিশমিলের পরিবর্তে শামুক, ঝিনুক, পশুর ভুঁড়ি ইত্যাদি কুটি কুটি করে কেটে বা রক্তের গুড়া দিয়েও খাদ্যে প্রাণীজ আমিষের অভাব পুরণ করা যাবে। খাবার ছিটিয়ে না দিয়ে পুকুরের দু'তিনটি কোনে ২-৩ ফুট নীচে ফিডিং ট্রেতে করে দেয়া উত্তম।
মাছের পরিচর্যাঃ পানির রং গাঢ় সবুজ হলে সার ও খাবার দেয়া বন্ধ রাখতে হবে। পুকুরের তলায় গ্যাস হলে জাল বা হররা টেনে গ্যাস দূর করতে হবে। মাঝে মাঝে জাল টেনে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। কোন রোগ বালাই দেখা দিলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করতে হবে।
পাঙ্গাস মাছের আহরণ/উৎপাদন
পাঙ্গাস মাছ খুব অল্প সময় বাজারজাত করা যায়। এই মাছ খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে অধিক লাভবান হওয়া যায়। উল্লেখিত পদ্ধতিতে চাষ করলে ১ বৎসর পরই পাঙ্গাস মাছ বিক্রি করা যেতে পারে। এ সময়ে পাঙ্গাস মাছ গড়ে ১.০-১.৫ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। অন্যান্য মাছও বাজার জাতের উপযোগী হয়।
নদীর পাঙ্গাস মাছ চেনার উপায়
প্রিয় পাঠক উপরিক্ত আলোচনা থেকে আপনি পাঙ্গাস মাছের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আশা করি আর্টিকেলটিতে থেকে আপনি উপকৃত হবেন। আমাদের মনে অনেক সময় প্রশ্ন জাগে যে আমরা নদীর পাঙ্গাস মাছ কিনবো কিভাবে? নদীর পাঙ্গাস মাছ চেনার বিভিন্ন উপায় রয়েছে চলুন সেগুলো জেনে নি-
আকার আকৃতিঃ পুকুরের পাঙ্গাস মাছের চেয়ে নদীর পাঙ্গাস মাছের আকার আকৃতি অনেক বড় হয়। নদীর পাঙ্গাস মাছ সাধারণত ৫০ কেজি ওজন পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাই বড় আকৃতির মাছ দেখলে বুঝা যাবে সেগুলো নদীর মাছ হতে পারে।
শরীরের গঠনঃ নদীর পাঙ্গাস মাছের দেহ লম্বাটে হয়ে থাকে এবং চ্যাপ্টা।
মাথাঃ নদীর পাঙ্গাস মাছের মাথা আকৃতিতে ছোট হবে।
ঠোঁটঃ ঠোঁট মাঝারি আকারের হয়ে থাকে এবং হালকা করে মুখের দিকে বাঁকানো।
পাখনাঃ অনেক সময় পাখনা দেখলে চেনা যায় সেটি নদী নাকি পুকুরের মাছ তেমনি নদীর পাঙ্গাস মাছের পুচ্ছ পাখনা দীর্ঘ এবং গভীরভাবে ফর্কেড।
চোখঃ চাষ ভেদে মাছের চোখ বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে। নদীর ক্ষেত্রে পাঙ্গাস মাছের চোখ বড় এবং সাধারণত গোলাকার এবং রঙের দিক থেকে হলুদ বা বাদামী রঙের।
চামড়াঃ চামড়ার রং রুপালি এবং খুবই মসৃণ হয়ে থাকে।
বাসস্থানঃ মিঠা পানিতে বসবাস করে এবং একসাথে দলবেঁধে থাকে।
খাদ্যঃ নদীর পাঙ্গাস মাছের আলাদা করে খাবার সরবরাহ করতে হয় না নদীতে বসবাসরত ছোট মাছ এবং জলজ উদ্ভিদ ইত্যাদিকে খেয়ে থাকে।
আচরণঃ নদীর পাঙ্গাস মাছ খুব দ্রুত সাঁতার কাটতে পারে যার ফলে শিকারিদের হাত থেকে দ্রুত পালাতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আজকের এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকের আর্টিকেলটির মধ্যে পাঙ্গাস মাছ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আপনি কিভাবে খুব কম পুঁজিতে পাঙ্গাস মাছ চাষ করবেন তা আশা করি ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন। যেহেতু পাঙ্গাস মাছ অল্প পুঁজিতে চাষ করা যায় তাই ব্যাপকভাবে লাভবান হতে পারবেন।
এছাড়াও পাঙ্গাস মাছের রোগ বালাইও কম তাই অন্যান্য মাছের তুলনায় পাঙ্গাস চাষে খরচ কম। এছাড়াও পাঙ্গাস মাছ জলজ উদ্ভিদ কে বেঁচে থাকে তাই খাবার কম প্রয়োজন হয়। আপনি চাইলে উপরোক্ত পদ্ধতিতে পাঙ্গাস মাছ চাষাবাদ করতে পারেন। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি বিন্দুমাত্র উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকেও পাঙ্গাস মাছ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিন।
আশা করি আজকের এই পোস্টটি আপনি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। আপনার যদি কোন মতামত এবং প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আর হ্যাঁ ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে ভুলবেন না। আপনার প্রতিটা মুহূর্ত সুন্দর হোক-আসসালামু আলাইকুম
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url